সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন
নবাবগঞ্জে পুলিশ পরিচয়ে স্বর্ণাংকার ডাকাতির ঘটনায় ২জন আসামি গ্রেফতার।
ইমরান হোসেন ইমু। সংবাদদাতা।
নবাবগঞ্জ থানাধীন আগলা ইউনিয়নের আগলা সাকিনস্থ ঢাকা-নবাবগঞ্জ সড়কের আগলা পোষ্ট অফিসের সামনে পাকা রাস্তার উপর হইতে ভিকটিম কৃষ্ণ সাহা (৫২) এর নিকট পুলিশ পরিচয়ে স্বর্ণালংকার ও রুপার অলংকার এবং নগদ টাকা ডাকাতি করার চাঞ্চল্যকর ঘটনার সহিত জড়িত প্রধান আসামীকে গ্রেফতার ও লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার ও
ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
ভিকটিম কৃষ্ণ সাহা (৫০) আগলা বাজারের “দিয়া জুয়েলার্স” এর মালিক। প্রতিদিনের ন্যায় গত ৩০/০৪/২৩ ইং তারিখ সকালে টিকরপুরস্থ বাড়ী হইতে অটোরিক্সা যোগে আগলা বাজারে তাহার নিজের দোকানে যাওয়ার পথে নবাবগঞ্জ থানাধীন আগলা ইউনিয়নের আগলা সাকিনস্থ ঢাকা- নবাবগঞ্জ সড়কের আগলা পোষ্ট অফিসের সামনে পাকা রাস্তার উপরে পৌছাইলে অনুমান ৮.৩০ টা থেকে ৮.৫৫ ঘটিকার মধ্যে টিকরপুর মোড় হইতে একটি সাদা রংয়ের চলন্ত হায়েস (মাইক্রোবাস) ব্যাটারী চালিত রিক্সার পাশ ঘেঁষে চলন্ত অবস্থায় ভিতর হইতে একজন দুস্কৃতিকারী নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে বাদীকে বহনকারী ব্যাটারী চালিত রিক্সার গতিরোধ করিয়া মাইক্রোবাসের ভিতর হইতে ০৩ জন দুস্কৃতিকারী নামিয়া তাহাকে বলে নামে থানায় ওয়ারেন্ট আছে, তোকে থানায় যেতে হবে। এই বলিয়া ০২ জন দুষ্কৃতিকারী বাদীর দুই হাত জোর করে চাপিয়া ধরে মাইক্রোবাসে তুলিয়া নেয়। পরবর্তীতে দুষ্কৃতিকারীরা চলন্ত মাইক্রোবাস হইতে ধাক্কাদিয়া মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানাধীন সাওরাইল গ্রামের রাস্তার পাশের খাদে বাদী কৃষ্ণ সাহাকে ফেলাইয়া দিয়া তাহার কাছে থাকা সর্বমোট স্বর্ণালংকার আনুমানিক ২৫০ ভরি, মূল্য অনুমান ২,৩০,৫০,০০০/-(দুই কোটি ত্রিশ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা এবং মোট ৫০০ ভরি রুপা, মূল্য অনুমান =৬,০০,০০০/- (ছয় লক্ষ) টাকা সহ নগদ ২,৬৫,০০০/- (দুই লক্ষ পয়ষট্টি হাজার) টাকা, যাহা সর্বমোট লুণ্ঠিত মালামালের মূল্য অনুমানিক ২,৩৯,১৫,০০০/- টাকা (দুই কোটি উনচল্লিশ লক্ষ পনের হাজার) টাকা ডাকাতি করিয়া নিয়া সিংগাইর থানা এলাকার দিকে চলিয়া যায়।
তদন্ত ও অভিযানের ফলাফল:-
পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো: আসাদুজ্জামান, পিপিএম (বার) এর দিক নির্দেশনায় অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্: ও ট্রাফিক দক্ষিণ) মো: আমীনুল ইসলাম এর তত্ত্বাবধানে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার দোহার সার্কেল মোঃ আশরাফুল আলম এর নেতৃত্বে
অফিসার ইনচার্জ নবাবগঞ্জ থানা মোহাম্মদ মামুন অর রশিদ পিপিএম,।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আশফাক রাগীব হাসান সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্স সহ একটি চৌকস টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অত্র ডাকাতির সাথে জড়িত সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য ঢাকা, গাজীপুর, টাংগাইল, মানিকগঞ্জ, লক্ষীপুর জেলায় টানা অভিযান চালিয়ে পূর্বে ১৩ জন ডাকাত সদস্যকে গত ০৮/০৫/২০২৩ তারিখ গ্রেফতার করেন এবং তাহাদের নিকট হইতে লুষ্ঠিত ১৭৭ ভরি স্বর্নালংকার, ৩৮৬ ভরি রুপার অলংকার ও নগদ ৪৯,০০০/- টাকা উদ্ধার করা হয়। অত্র মামলায় গ্রেফতাকৃত আসামীদের মধ্যে ০৬ (ছয়) জন আসামী বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃকাঃবিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। গ্রেফতারকৃত আসামী কর্তৃক ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় প্রদত্ত স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিতে মামলার ঘটনাটি উক্ত আসামী মো: মোজাম্মেল হোসেন আপেল ② হাজী আপেল (৪৬) এর নেতৃত্বে সংঘটিত হয় মর্মে প্রকাশ করে। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামী মো: মোজাম্মেল হোসেন আপেল হাজী আপেল (৪৬) কে মিরপুর থানা (ডিএমপি) এলাকা হইতে গ্রেফতার করার পর তাহার স্বীকারোক্তি মোতাবেক দক্ষিণ খান থানা, এয়ারপোট থানা, কোতয়ালী থানা এবং টেকনাফ থানা (কক্সবাজার) এলাকায় অভিযান পরিচালনা করিয়া অত্র মামলায় লুন্ঠিত অনুমান ২১ (একুশ) ভরি বিভিন্ন ধরনের স্বর্নালংকার স্বর্নালংকার ও ১ ভরি ৮ আনা ওজনের রুপার ০১ জোড়া চুড়ি এবং নগদ ৫০,০০০/- টাকা উদ্ধার করা হইয়াছে। উক্ত মামলার ঘটনার সহিত জড়িত অপর আসামী মো: আয়ুব ওরফে আইয়ুব (৩৮) কে গ্রেফতার করা হইয়াছে। গ্রেফতারকৃত আসামী আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তাহার নেতৃত্বে প্রায়শই ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূয়া ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করা হয়ে থাকে। গ্রেফতারকৃত আসামীর নামে দেশের বিভিন্ন থানায় ১৭ টি ডাকাতি সহ বিভিন্ন ধরণের মামলা রয়েছে। পুলিশ পরিচয়ে চাঞ্চল্যকর স্বর্ণ, রুপা ও নগদ টাকা ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্ত ডাকাতদের দ্রুততম সময়ে মধ্যে গ্রেফতার, ডাকাতির মালামাল উদ্ধার ও আলামত উদ্ধার হওয়ায় এলাকায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে ও পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধিন।
তদন্তে প্রাপ্ত গ্রেফতারকৃত আসামীর
মোঃ মোজাম্মেল হোসেন আপেল ওরফে হাজী আপেল (৪৬), পিতা-মৃত মোশারফ হোসেন, মাতা- সোহেলা খানম, সাং-জামালপুর, থানা-কালীগঞ্জ, জেলা-গাজীপুর
জব্দকৃত আলামত মালামালের বিবরণ
২০ (বিশ) ভরি ১২ আনা বিভিন্ন ধরনের স্বর্ণালংকার, ০১ ভরি ০৮ আনা ওজনের রুপর ০১ জোড়া চুরি এবং নগদ ৫০,০০০/- টাকা।